ছবি- পিটিআই
সৌরভ দত্ত: ভোট তৃতীয়া শেষে দুশ্চিন্তার বলিরেখা তৈরি করল রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি। আক্ষরিক অর্থেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে বাংলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। প্রতিদিনের করোনা বুলেটিন তো বটেই যার প্রতিফলন ঘটেছে স্বাস্থ্য দফতরের অভ্যন্তরীণ করোনা রিপোর্টেও। গত সপ্তাহের তুলনায় দ্বিগুণ হয়েছে সাপ্তাহিক পজিটিভিটি রেট। সাতদিনের ব্যবধানে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা এবং প্রতিদিনের গড় আক্রান্তের সংখ্যাও দ্বিগুণ! ধারাবাহিক ভাবে কমছে সুস্থতার হার। মৃত্যুর পরিসংখ্যানে এতদিন যে স্বস্তি ছিল এবার তা-ও উধাও হতে শুরু করেছে।
স্বাস্থ্য দফতরের অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট অনুযায়ী, ৭দিন আগেও রাজ্যের পজিটিভিটি রেট ছিল ২.৭৪%। তা এখন বেড়ে হয়েছে ৫.৯৩%! দশ থেকে একুশটি জেলায় এখন করোনা সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বমুখী। শীর্ষে কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, বীরভূম এবং পশ্চিম বর্ধমান। কেন এমন পরিসংখ্যান তা গত সাতদিনে মোট আক্রান্তের সংখ্যা থেকেই স্পষ্ট। এক সপ্তাহ আগে ৭দিনে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪৩০৬। এখন সেটাই হল ১০ হাজার ২৭১। সাতদিনে গড় আক্রান্তের সংখ্যা ৬১৫ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৪৬৭। এ সবের ফলে রাজ্যের অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ৫১৫২ থেকে বেড়ে হয়েছে ১১ হাজার ৪৪৬। সুস্থতার হার ৯৭.৩৬% থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৯৬.৩৪%। স্বস্তি বলতে মৃত্যুহার। ০.৩৯% থেকে এ সপ্তাহে মৃত্যুহার কিঞ্চিৎ কমে হয়েছে ০.২২%।
কিন্তু কতদিন সেই স্বস্তি বজায় থাকবে তা নিয়ে সন্দিহান স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের একাংশ। তাঁরা বলছেন, মঙ্গলবার যে ৭ জনের মৃত্যু স্বাস্থ্য দফতরের করোনা বুলেটিনে দেখানো হয়েছে তা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে রেকর্ড শুধু নয়। প্রতিটি মৃত্যু হাসপাতালে আক্রান্তকে ভর্তি করানোর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হয়েছে। স্বাস্থ্য আধিকারিকদের বক্তব্য, এর অর্থ একেবারে শেষ মুহূর্তে রোগীকে হাসপাতালে আনা হচ্ছে। এই প্রবণতা জারি থাকলে হোম আইসোলেশনে থাকা রোগীদের মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে পারে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য ভবনের আধিকারিকদের একাংশ। স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য বলছে, গত ৫ এপ্রিল পর্যন্ত রাজ্যের মোট সাড়ে এগারো হাজার আক্রান্তের মধ্যে ৯৮৬১ জনই হোম আইসোলেশনে রয়েছেন। সব মিলিয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, পরিস্থিতি মোটেই ভাল নয়।
বেলেঘাটা আইডি-র চিকিৎসক, করোনা বিশেষজ্ঞ কৌশিক চৌধুরী জানান, দ্বিতীয় ওয়েভের গতি অনেকটা বেশি। প্রতি দিন আগে ১০ জন করে ভর্তি হলে এখন ভর্তি হচ্ছেন ১৫ থেকে ২০ জন। তাঁদের শারীরিক অবস্থা গুরুতর কিনা এই মুহূর্তে বলা যাবে না। কিন্তু যে গতিতে এগোচ্ছে, আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে, কৌশিকবাবু আশঙ্কা করছেন, এবার পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হতে পারে। মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়বে। তাঁর দাবি, কম বয়সীদের মধ্যে আক্রান্ত একটু বেশি। আগে ১০ জন আশঙ্কাজনক রোগীর মধ্যে ৭ জনের বয়স ছিল ৬৫ বছরের উর্ধ্বে। এ বার সেই হার পঞ্চাশ-পঞ্চাশ। হোম আইসোলেশনে থাকা অনেকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি হচ্ছেন।
আরও পড়ুন- দেশ জুড়ে করোনার উর্ধ্বমুখী গ্রাফ, বড় সিদ্ধান্ত নিল রেল!
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক অনির্বাণ দোলুই বলেন, “এক মাসের মধ্যে প্রতিষেধক প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে না পারলে, রাজ্যে নেতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক হয়েছে। এ বারে করোনা সংক্রমণ আরও ভয়ঙ্কর। জ্বর, ডায়েরিয়া, গা-হাত পা ব্যাথ্যা, দুর্বলতার মতো উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হচ্ছেন রোগীরা।”

২৪X৭ নিউজ বেঙ্গল এ সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা এবং ইংলিশ খবর পড়ুন ২৪X৭ নিউজ বেঙ্গল এর ওয়েবসাইটে। নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে।
‘রঙ’ ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা ‘খাচ্ছে’? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম ‘সংবাদ’! ‘ব্রেকিং’ আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের। কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে ‘রঙ’ লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে ‘ফেক’ তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই ‘ফ্রি’ নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।
Discussion about this post