সুজয় মণ্ডল বসিরহাট: দাদা শুনছি নাকি এবার ঘোষ বাড়ির পুজোয় ৪০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে মাক্স ও স্যানিটাইজার বিলি করবে। ঘোষ বাড়ির যে সমস্ত বংশধরা শহরের বিভিন্ন প্রান্তে থাকেন তারাও এবার এই পুজো তে আসছেন। উত্তর ২৪ পরগণায় প্রাচীনকাল থেকে হয়ে আসা দুর্গা পুজো গুলির মধ্যে অন্যতম হাসনাবাদ রামেশ্বরপুর ঘোষ বাড়ি দুর্গাপূজা। বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেষা ইছামতীর নদীর পারে এই পুজো চলে আসছে কয়েক শতাব্দী ধরে। জানা যায় জমিদার প্রথা থাকাকালীন শুরু হয়েছিল এই ঘোষ বাড়ির পুজো। আজও সেই রীতি রেওয়াজ মেনে চলে আসছে এই ঘোষ বাড়ি পুজোটি। স্থানীয় সূত্রে জানা যায় এই প্রান্তিক সুন্দরবন অঞ্চলের প্রথম আধুনিকতা চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রসার ঘটিয়ে ছিলেন ঘোষ বাড়ির সন্তান, জমিদার প্রতাপ চন্দ্র ঘোষ। দরিদ্র প্রজা দের উদ্দেশ্যে তার এই চিকিৎসার প্রচলন। প্রজাদের সুখ দুঃখের কথা ভেবেই ডাক্তারি পড়ার জন্য কলকাতায় পাড়ি দেন। তৎকালীন জমিদার বাড়িতে লোকজনের অবাধ প্রবেশ নিষেধ ছিল ।তবুও সেই প্রথাকে ভেঙে প্রতাপ বাবু চিকিৎসা শুরু করেন গ্রাম গঞ্জে গিয়ে। প্রজাদের অত্যন্ত প্রিয় মানুষ হয়ে ওঠেন জমিদার প্রতাপ চন্দ্র ঘোষ। এছাড়াও জানা যায় শিক্ষার প্রসারের জন্য স্কুলে জমি দান করে গেছেন। ঘোষ বাড়ি সদস্যদের কাছ থেকে জানা যায় রথের দিন কাঠামো কাটার মধ্য দিয়ে প্রতিমা তৈরীর কাজ শুরু হয়। মৃৎ শিল্পীরা ঠাকুরদালানে বসেই প্রতিমা তৈরি শুরু করেন। এই ঠাকুরদালান টি প্রথমদিকে গোলপাতা ছাউনি ছিল। পরবর্তীকালে জমিদার বাড়ি এই দালানটি কে কংক্রিটের তৈরি করেন।
জানা যায় এই পুজোটি ১০ দিন ধরেই দেবীর পুজো অর্চনা আরাধনা ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দুর্গা পুজোর আনন্দ চলে। এই বিষয়ে ঘোষ বাড়ির ষষ্ঠ পুরুষ তুহিন ঘোষ জানান আমাদের বাড়ির পুজো প্রথমেই শুরু হয় এই রামেশ্বরপুরে এবং তখন কোথাও আশেপাশে দুর্গাপুজো হতো না। তাই দূর-দূরান্ত থেকে গরুর গাড়িতে করে পুজো দেখতে আসতেন এলাকার আশপাশের বহু মানুষ। প্রজাদের মনোরঞ্জনের উদ্দেশ্যে থাকত খাওয়া-দাওয়া সেই সময়ের নানান অনুষ্ঠান সারারাত ধরে প্রজারা উপভোগ করত। এই বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষক রাজেশ লস্কর জানান ঘোষ বাড়ির পুজো মানেই একটা আলাদা আমেজ ।রীতি রেওয়াজ অন্যান্য পুজোর থেকেও আলাদা। যেমন ষষ্ঠীতে দেবী মূর্তি কে সাজানো হয় শাড়ি সোনার হার দুল টিপ দিয়ে। এবং প্রতিদিন স্নান করানো হলেও দেবীর সারী বদলানো হয় না। এই পুজোটি কে ঘিরে নানান কৌতুহল লেগে থাকে গ্রামবাসীদের ভিতর। খুব জাগ্রত পুজো গ্রামের সাধারণ মানুষ বিপদে আপদে বা অসুখ-বিসুখ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য মানত করতেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায় সেই সমস্ত অসুখ-বিসুখ থেকে অনেকেই নাকি মুক্তি পেয়েছেন। পুজো মণ্ডপ ঘিরে আছে নানা অলৌকিক ঘটনা। যেমন এক সময় মধ্যরাতে একটি ডাকাত দল ঘোষ বাড়িতে ডাকাতি করতে এসে ডাকাতি করতে পারেননি সারারাত মায়ের মন্দিরে অজ্ঞান হয়ে শুয়ে ছিলেন।বহু পৌরাণিক পুজোর মধ্যে এই রামেশ্বরপুর ঘোষ বাড়ির পুজো অন্যতম।

২৪X৭ নিউজ বেঙ্গল এ সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা এবং ইংলিশ খবর পড়ুন ২৪X৭ নিউজ বেঙ্গল এর ওয়েবসাইটে। নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে।
‘রঙ’ ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা ‘খাচ্ছে’? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম ‘সংবাদ’! ‘ব্রেকিং’ আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের। কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে ‘রঙ’ লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে ‘ফেক’ তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই ‘ফ্রি’ নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।
Discussion about this post