শান্তনু কর্মকার: আনন্দের শহর, হাজারো স্বপ্নের শহর কলকাতা। প্রতিদিন কতশত মানুষের আনাগোনা হয় এ শহরে তার হিসেব হয়ত শহর নিজেও রাখেনা। তবে অভিজ্ঞরা বলেন, এ শহরে যারা সয়, তারা রয়। এ শহর জহুরি যেন, আকরিক-কে খাটিয়ে খাঁটি সোনা বানায়।
সত্যিই তো! মহানগরীতে স্ট্রাগল শেষে সাফল্যের গল্পের তো আর অভাব নেই, বহু মানুষ এমন রয়েছেন যারা আধাশহর কিংবা গ্রাম থেকে এসে গোটা বাংলা তথা বিশ্বকে প্রভাবিত করেছেন নিজেদের প্রতিভার মাধ্যমে। কিন্তু এই এরাই যখন জীবনসংগ্রামে মত্ত থাকেন তখন কে-ই বা খোঁজ রাখে? খোঁজ নিলাম আমরা, খুঁজে নিলাম মফস্বল থেকে আসা এমন চার-কন্যাকে যারা এখনো তারকা নন ঠিকই তবে তারকা হওয়ার সব মশলা-ই রয়েছে। আড্ডা দিলাম, জেনে নিলাম তাদের হাল-হকিকত।
অনুসুয়া দাস, সুলগ্না শীল, জ্যোতি শর্মা এবং অঞ্জনা দাস। চারজনেই এসেছেন মফস্বল থেকে, পেতে চাইছেন বিনোদন জগতে শক্ত মাটি।
প্রশ্ন: আপনারা প্রত্যেকেই মফস্বল শহর থেকে এসেছেন। প্রথমেই জেনে নিতে চাইব যে কে কোথা থেকে এসেছেন আপনারা
অনুসুয়া: বজবজে বাড়ি আমার। কলকাতায় এই তিনবছর ধরে কাজ করছি আমি।
সুলগ্না: আমি দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের মেয়ে। পাঁচ বছর হল কলকাতায় এসেছি, থাকছি৷
জ্যোতি: আমি কিন্তু বাইরের শহরেরই নয়, আমি কিন্তু ভিনরাজ্যেরও। আমি পাঞ্জাবের মেয়ে, দশবছর হল কলকাতায় রয়েছি কর্মসূত্রে।
অঞ্জনা: আমি বনগাঁ থেকে আসছি। বনগাঁয় আমার বাড়ি।

প্রশ্ন: আচ্ছা, কলকাতায় আসার পরে নিশ্চই স্ট্রাগল করতে হয়েছে অনেকটাই, শুরুর দিকে নিশ্চই সব এত মসৃণ ছিল না। এত অবধি কোথায়, কাদের সঙ্গে কাজ করেছেন?
অনুসুয়া: শিশুশিল্পী হিসেবে শুরু করেছি আমি। তখন থেকে মডেলিং, অল্পবিস্তর অভিনয় চলছে, বেশ ভাল আছি। এখনো অবধি কিছু গানে কাজ করেছি, তবে সেগুলো নানা কারণে প্রকাশিত হয়নি। তাছাড়া স্থানীয় কিছু ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করেছি, বড় কোনো ব্র্যান্ড শ্যুট করিনি।
সুলগ্না: হ্যাঁ, শুরুটা সত্যিই সহজ ছিল না, তবে আমি পরিবারের সহযোগিতা পেয়েছি। আর তাদের জন্যই এখন আমি এই জায়গায়। আমার প্রথম কাজ SRL এর ২০২১ সালের ক্যালেন্ডারে। এছাড়াও ই-কমার্সের বিভিন্ন শ্যুট আমি করেছি। ছোটখাটো বুটিকের সঙ্গে কাজ করেছি।
জ্যোতি: স্ট্রাগল করতে হয়েছে। তবে আমি কিন্তু বিমানসেবিকা ছিলাম প্রথমে। বিজয় মাল্যর কিংফিশার ডুবে যাওয়ায় পরে মডেলিং জগতে পা রেখেছি আমি। আস্তে আস্তে বুঝেছি বিনোদন জগতটাকে, এখন অল্প বিস্তর কাজ করছি।
অঞ্জনা: ছোটবেলা থেকেই আমি এইসব বিষয়ে বেশ আগ্রহী ছিলাম। আমার মনে হয়েছিল যে আমার এই পেশায় আসা উচিত, তাই নিজেকে পরখ করতেই এই কাজে আসা। সেই সূত্রেই কলকাতায় আসা। এসে ২০২১ সালের ক্যালেন্ডারে কাজ করেছি আমি, ব্যাস এটুকুই।

প্রশ্ন: কোনোদিন এমন হয়েছে যে হয়ত আপনি কাজটা ডিসার্ভ করেন অথচ পেলেন না, অন্য কেউ পেল?
অনুসুয়া: আমার সঙ্গে এই ঘটনাই ঘটে। আমি বহুবার এরকম পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি। ছোট থেকেই দেখে আসছি। এগুলো নতুন কিছু নয় আমার কাছে।
সুলগ্না: হ্যাঁ, এমন বহুবার হয়েছে। হয়ত ফটোগ্রাফার, প্রোডিউসার এমন কিছু চেয়েছেন যা আমি দিতে পারিনি। কাজ খোয়াতে হয়েছে সেক্ষেত্রে।
জ্যোতি: হ্যাঁ, হয়েছে তবে সব কারণ তো সবসময় বলা যায়না। হতে পারে অন্যান্যরা আমার থেকে যোগ্যতায় বেশি।
অঞ্জনা: না, আমার অভিজ্ঞতা কিন্তু বাকীদের চেয়ে আলাদা। আমার সঙ্গে এরকম এখনো হয়নি।

প্রশ্ন: এরপরে কি কি কাজের পরিকল্পনা রয়েছে আপনাদের?
অনুসূয়া: ক্যালেন্ডারের ফটোশ্যুট আছে। নাম নিতে চাইনা, তবে একটি জুয়েলারি ব্র্যান্ডের সঙ্গেও কাজ করার কথা রয়েছে আমার।
সুলগ্না : আমি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে কাজ কিরতে চাই। অভিনয় করতে চাই ওয়েবসিরিজে, সিরিয়ালে, সুযোগ পেলে সিনেমাতেও৷ সেক্ষেত্রে কমার্শিয়াল মুভিতে কাজ করতে পারলে বেশ ভাল লাগবে৷ এবার দেখা যাক কী হয়।
জ্যোতি : তেমন বেশি কিছু নয়, এরপরে একটি শর্টফিল্মে কাজ করার কথা রয়েছে আমার। সামনের মাস থেকেই শ্যুটিং শুরুর কথা৷
অঞ্জনা: আমার মূলত সিনেমায় কাজ করার ইচ্ছে রয়েছে। তেমন ভাল চরিত্র পেলে অবশ্যই করব আমি কাজ।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাদের। আশা করব আপনারা আরো এগিয়ে চলবেন নিজেদের জীবনে। শত বাধা পেরিয়ে, সহস্র প্রলোভনকে সবিনয়ে পাশ কাটিয়ে একটা ঝকঝকে কেরিয়ার গড়বেন। শহরতলি থেকে কলকাতায় এসে এমন কিছু করবেন যাতে গোটা শহর মনে রাখে আপনাদের। শুভেচ্ছা রইল৷
(Courtesy: SRL Motion Pictures Entertainment)

২৪X৭ নিউজ বেঙ্গল এ সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা এবং ইংলিশ খবর পড়ুন ২৪X৭ নিউজ বেঙ্গল এর ওয়েবসাইটে। নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে।
‘রঙ’ ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা ‘খাচ্ছে’? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম ‘সংবাদ’! ‘ব্রেকিং’ আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের। কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে ‘রঙ’ লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে ‘ফেক’ তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই ‘ফ্রি’ নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।
Discussion about this post