শুভজিৎ মাখাল: আপনার কি ধারণা আছে এই বিংশ শতকের সবথেকে ভয়ংকর অস্র কোনটি ?? বেশিভাগ মানুষই যারা একটু ধারণা রাখেন এই বিষয়ে তারা উত্তর দেবেন আমেরিকার পারমাণবিক বোমা যেটি লক্ষ মানুষের প্রাণ নিয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে । উত্তরটি ঠিক ভুল বলা যাবে না, কিন্তু পারমাণবিক বোমার পাশাপাশি আরেকটি অস্ত্র রয়েছে যেটি আজও ব্যবহার করা হচ্ছে । অস্ত্রটি হচ্ছে একটি অ্যাসল্ট রাইফেল যেটি পারমাণবিক বোমার থেকে বেশি নিয়েছে এবং আজ ও নিয়ে চলেছে । অ্যাসল্ট রাইফেলটির নাম হলো একে-৪৭ (AK-47)। সকল মানুষের একটু ধারণা রয়েছে একে-৪৭ বিষয়ে । এই অ্যাসল্ট রাইফেলটি তৈরি করা হয়েছিল ১৯৪৭ সালে সোভিয়েত সেনাবাহিনীর জন্য । অনেকের কাছে এই রাইফেলটির নান্দনিকতা ও কাঠামো আবেদনময় নয়। কিন্তু যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে রাইফেলের নান্দনিকতা ও কাঠামো কাজে আসে না । যেগুলি কাজে আসে সেগুলি হলো সরলতা, দূরত্ব ও নির্ভুলতা ।

এই পৃথিবীতে হাজার ধরনের অ্যাসল্ট রাইফেল আছে কিন্তু এদের মধ্যে একে-৪৭ এমন একটি রাইফেল যেটি মানুষ ব্যবহার করে বিপ্লব গঠিত ব্যাপারে, দাঙ্গা, বিদ্রোহ, দেশে মতা দখলের উদ্দেশ্যে আকস্মিক পদক্ষেপ, অবৈধ শিকার ও আরো অনেক কারণে। একে-৪৭ কেবল বহু দেশের সামরিক বাহিনীরা শুধু ব্যবহার করে আর কেউ করে না এমনটি নয়। একে-৪৭ রাইফেল বিশ্বের প্রচুর সন্ত্রাসী সংগঠন, মাফিয়া দল ও অন্যান্য অবৈধ সংগঠন ব্যবহার করে তার একটি কারণ একে-৪৭ সরলতা। এই রাইফেলটির ব্যবহার খুবই সরল যার ফলে বুড়ো থেকে বাচ্চারাও খুব সহজেই শিখে ফেলে। এটি ও প্রচলিত আছে যে একে-৪৭ এমন একটি রাইফেল যার নকশা প্রক্রিয়া এতই অসাধারণ যে একটি সৈনিককে যুদ্ধকালীন সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে বাঁচিয়ে রাখতে সাহায্য করে। আবহাওয়া ও হ্যান্ডলিং যতটা খারাপ থাকুক না কেন এই রাইফেলের কোন ক্ষতি হয়না। এই সব কারণের জন্য একে-৪৭ রাইফেল সেনাবাহিনী, অস্ত্র ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসীদের খুব প্রিয়। বিশ্ব ব্যাংকের রিপোর্ট অনুযায়ী বিশ্বে ৫০০ মিলিয়ন অস্ত্রের মধ্যে একে-৪৭ একাই ১০০ মিলিয়ন রয়েছে। একে-৪৭ রাইফেল উতপাদন খুব লাভ জনক, এই রাইফেল ছোট, ওজন হালকা ও রিকয়ল্ পাওয়ার কম।

একে-৪৭ রাইফেল প্রচন্ডঠান্ডা, মরুভূমির তীব্র গরম ও জলীয় পরিবেশে পুরো দমে কাজ করে যার তুলনায় আমেরিকার এম-১৬ (M-16) রাইফেল ও ভারতের ইনসাস (INSAS) রাইফেল জ্যাম হয়ে যায়। একে-৪৭ রাইফেলের গ্যাস পিস্টন ও ভিতরে মুভিং পার্টস মধ্যে অনেক ব্যবধান আছে যার ফলে এই রাইফেল জ্যাম হয়ে না। একে-৪৭ কে প্রতিযোগিতায় ছাড়িয়ে যেতে আমেরিকা এম-১৬ রাইফেল তৈরি করে। এই দুটি রাইফেলের বাস্তব টক্কর ভিয়েতনাম যুদ্ধে (১৯৫৪-৭৫) ঘটে। এম-১৬ রাইফেল ঘন ঘন জ্যাম হয়ে যেত যার ফলে মার্কিন সেনাদের ভয়াবহ অবস্হায় পড়তে হতো। এটি ও দেখা গিয়েছে যে অনেক সময় মার্কিন সৈনরা নিজেদের এম-১৬ রাইফেল ফেলে দিত এবং তাদের শত্রু অথাৎ মৃত ভিয়েতনামিদের একে-৪৭ তুলে নিয়ে যুদ্ধ করতো। একে-৪৭ রাইফেল এতো দাম কম হওয়ার কারণ এই রাইফেলটি ওই সব দেশে তৈরি করা হয় যে দেশের মজুরি খরচ অনেক কম। একে-৪৭ একটি কিংবদন্তি রাইফেল যার প্রভাব পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে আছে। বহু দেশ আছে যাদের জাতীয় পতাকায় একে-৪৭ ছবি রয়েছে।

২৪X৭ নিউজ বেঙ্গল এ সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা এবং ইংলিশ খবর পড়ুন ২৪X৭ নিউজ বেঙ্গল এর ওয়েবসাইটে। নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে।
‘রঙ’ ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা ‘খাচ্ছে’? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম ‘সংবাদ’! ‘ব্রেকিং’ আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের। কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে ‘রঙ’ লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে ‘ফেক’ তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই ‘ফ্রি’ নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।
Discussion about this post