বনগাঁতে চলছে রেল অবরোধ (নিজস্ব চিত্র)
উত্তর ২৪ পরগনা: রাজ্যে বিধিনিষেধের জেরে বাতিল ফার্স্ট ট্রেন। প্রতিবাদে একদিকে বিক্ষোভ শিয়ালদা-ক্যানিং দক্ষিণ শাখার তালদি স্টেশনে, অন্যদিকে বিক্ষোভ শুরু শিয়ালদা বনগাঁ শাখার ঠাকুরনগর স্টেশনেও। প্রথম দুটো ট্রেন বাতিলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন নিত্যযাত্রীরা।
বনগাঁ থেকে শিয়ালদাগামী প্রথম ও দ্বিতীয় ট্রেনের দাবিতে রাত দুটো থেকে ঠাকুরনগর রেল গেটে অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন নিত্যযাত্রীরা। বিক্ষোভে সামিল মূলত ফুল ব্যবসায়ীরা। কারণ ফার্স্ট ট্রেনে তাঁরাই মূলত কলকাতায় আসেন ফুল বাজারে। দিনের প্রথম দুটো ট্রেন বাতিল হয়ে যাওয়ায় প্রবল সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা। রাত দুটো থেকে রেল লাইনের ওপর ফুলের বোঝা ফেলে অবরোধ শুরু করেছেন তাঁরা।
বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, প্রথম দুটো ট্রেনেই তাঁরা মূলত ফুল নিয়ে কলকাতায় যান। ফুলের ব্যবসা করে তাঁদের পেট চলে। সকালের দুটো ট্রেন না চললে, তাঁরা কলকাতায় যেতে পারবেন না। আর গেলেও সে ব্যবসা জমবে না। না খেয়ে মরতে হবে তাঁদের! ফলে অবিলম্বে ফার্স্ট ট্রেন চালু করার দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা। যতক্ষণ না তাঁদের দাবি মিটছে, তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন। এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে রেলের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এক বিক্ষোভকারী বলেন, “ফুলের ব্যবসা দীর্ঘদিনের। আজীবন প্রথম ট্রেনেই ফুল নিয়ে শহরে যাই। গত লকডাউনেও আমরা ভীষণভাবে মার খেয়েছি। ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিলাম। আবার আমরা মুখ থুবড়ে পড়ছি। ফুল নিয়ে দেরিতে গিয়ে তো কোনও লাভ হবে না। ব্যবসা লাটে উঠবে। ফুলও শুকিয়ে যাবে। আগের বারও কত্ত ক্ষতি হয়েছে। আমাদের দেখবেটা কে! আমরা তো সে অর্থে কোনও সাহায্য পাই না। প্রথম ট্রেন না চললে, না খেয়েই মরে যাব।”
কাঁদতে কাঁদতে এক মহিলা ব্যবসায়ী বললেন, “করোনা কি শুধু ফার্স্ট ট্রেনেই রয়েছে! আর কোনও ট্রেনে নেই? ফার্স্ট ট্রেন না চললে আমাদের অন্তত ১০ হাজার মানুষ না খেয়ে মরবে। আমরা তো টিকিট কেটেই ভ্যান্ডারে যাই। বিনা টিকিটে যাই না। আমরা ভিখারি বলে কি মানুষ নই?” মহিলার এ প্রশ্নের উত্তর এখনও অধরা।
একই দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে শিয়ালদা ক্যানিং শাখার তালদি স্টেশনেও। লাইনের ওপর তুলে দেওয়া হয়েছে লোহার পাত। ট্রেনের সামনে দাঁড়িয়ে হাজার খানেক মানুষ।
অভিযোগ, ক্যানিং থেকে শিয়ালদাগামী প্রথম আপ ট্রেন ৩:৫২ মিনিটে ছাড়ে। সেই ট্রেন না চলার কারণে বহু মানুষ নিজেদের কর্মস্থলে যেতে পারছেন না। এই কারণেই বুধবার সকাল থেকেই একেবারে রেললাইনের ওপর লোহার পাত তুলে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন নিত্যযাত্রীরা।
এদিকে, রেলের দাবি রাজ্যের নির্দেশিকা মেনে ভোর ৫ টা থেকে ট্রেন পরিষেবা শুরু করা হচ্ছে। যেহেতু ৫ টা পর্যন্ত নাইট কারফিউ চলছে। তবে এক্ষেত্রে সরকার কী পদক্ষেপ করে সেটাই দেখার।
Discussion about this post