কোভিড পরবর্তী শহর, একরাশ স্বপ্নের নগর, ইচ্ছেপূরণ, লড়াইয়ের মহানগর কলকাতা। যদি প্রশ্ন করা হয়, এই শহরের সবচেয়ে জমকালো বিষয় ঠিক কোনটি? ওয়াকিবহাল মহল সোচ্চারে উত্তর দেবে, অভিনয় কিংবা মডেলিং! সাধারণ লিফলেট থেকে শুরু করে হোর্ডিং, বিপনন কৌশলের মাধ্যমে বড্ড সহজেই মানুষের চোখে লেগে থাকা যায়। সেই উদ্দেশ্য নিয়েই বহু তরুণ তরুণী জমে যেতে চান এ শহরে। শারদীয় দুর্গোৎসবের আমেজে আমরা গল্প শুনলাম সেরকমই দু’জন উঠতি মডেল পায়েল দাস, প্রেরণা গোস্বামীর। রইল সাক্ষাৎকার…
প্রশ্ন: আপনার নাম একেবারে আসল তো? নাকি কাজের সুবিধার্থে ছদ্মনাম?
পায়েল: না না, আমার নাম পায়েল দাস-ই৷
প্রেরণা: আমি প্রেরণা গোস্বামী। এ ছাড়া অন্য কোনও নাম নেই৷
প্রশ্ন: বেশ তো! আচ্ছা, তুমি কি শুরু থেকেই অভিনয়, মডেলিংয়ের সঙ্গে যুক্ত? নাকি অন্য কোনও পেশায় ছিলে আগে?
পায়েল: আমাকে পার্ট টাইম মডেল বলতে পারো৷ এমনিতে এর আগে টেলি-কলিং সহ অন্যান্য পেশায় যুক্ত ছিলাম। সম্প্রতি মডেলিং করছি, অভিজ্ঞতা হচ্ছে।
প্রেরণা : আমিও একেবারে ফুল টাইম মডেল নই। নিজের পড়াশোনা রয়েছে, অন্যান্য কাজ রয়েছে। এভাবেই চলছে।
প্রশ্ন: অভিনয়? নাকি মডেলিং? দুইয়ের মধ্যে বাছতে দিলে কোনটাকে এগিয়ে রাখবে?
পায়েল: অবশ্যই মডেলিং। আমি মিথ্যে বলব না, তবে অভিনয় করতে গেলে বড্ড সমস্যার সম্মুখীন হই। ভেতর থেকে আসে না ব্যাপারটা। আমি মডেলিংয়েই সুখে আছি।
প্রেরণা : অভিনয় যে খুব খারাপ লাগে বলব না। তবে এই মুহূর্তে বলতে পারি, মডেলিং প্রথম পছন্দ৷ জীবনে যেভাবে এগিয়েছি, মডেলিংয়ের সুযোগটাই বেশি এসেছে। তাই বাস্তববাদী হয়েই বেছে নিতে পারি৷
প্রশ্ন: এই টলিপাড়ায় কাজ শুরু কবে থেকে?
পায়েল : ইন্ডাস্ট্রিতে বেশিদিন হয়নি আমার৷ উত্তর কলকাতার একটি মিষ্টি প্রস্তুতকারী সংস্থার বিজ্ঞাপনে দেখা গিয়েছিল আমাকে। এর আগে একটি অ্যালবাম শ্যুটও করেছি আমি। এর আগে সাধারণ যেমন শ্যুট হয়, তেমনই শ্যুট করতাম আমি। লেন্সের সামনে দাঁড়াতে ভালো লাগত৷ এই ধরে নাও, দু’বছর হল।
প্রেরণা : বেশিদিন হয়নি। এই ধরে নাও এক বছর৷ আমি কিন্তু সবকিছু ভেবে মডেলিং শুরু করিনি। লকডাউনে ভেবেছিলাম নিজেকে অন্যভাবে ফুটিয়ে তুলব। তখন থেকেই এই কাজে টুকটাক চেষ্টা শুরু।
প্রশ্ন: প্রথম কাজ কী ছিল?
পায়েল : প্রথম কাজ বলতে…অ্যালবাম শ্যুটটা।
প্রেরণা : বিভিন্ন ফটোগ্রাফারদের সঙ্গে যোগাযোগ করে শ্যুট শুরু করেছিলাম, সেখান থেকেই শুরু। ওভাবে বলা কঠিন যে প্রথম কাজ কোনটা৷
প্রশ্ন: সাম্প্রতিক অতীতে কোন কোন কাজ করেছ?
পায়েল: এইত্ত এক মাস আগের কথা, পদ্মা শাড়ি কুটীরের হয়ে হোর্ডিং শ্যুট শেষ করলাম।
প্রেরণা : পদ্মা শাড়ি কুটীরের হোর্ডিং শ্যুট করেছি। গড়িয়াহাটের এরম নামী শাড়ির দোকানের বিগ্য়াপন এই প্রথম। খুব ভালো লেগেছে কাজটা করে। এ ছাড়া অন্যান্য বিজ্ঞাপনের কাজ করেছি, তবে সেগুলো কোনওটাই প্রকাশিত হয়নি এখনও৷
প্রশ্ন: আগামী দিনের লক্ষ্য? কী কী কাজ করতে চাও এরপরে?
পায়েল: সেভাবে অভিনয় করার ইচ্ছে নেই৷ তবে বিভিন্ন ম্যাগাজিনের হয়ে শ্যুট করার ইচ্ছে আছে। তাছাড়া, গান গাইতে পারি আমি। যদি সুযোগ মেলে, অবশ্যই সবটুকু উজাড় করে দেবো।
প্রেরণা: সত্যি বলছি, দুই ধরনের কাজই ভাল লাগে আমার। কনসেপচুয়াল কাজও ভাল লাগে আবার নামীদামী সংস্থার সঙ্গে কাজ করতে পারলে তো ভালোই হয়। তবে আমি জানি, দুই ক্ষেত্রেই অনেকটা পরিশ্রম লাগবে আমার, খাটতে হবেই।
প্রশ্ন: বেশি না, আজ থেকে ২ বছর বাদে নিজেকে কোন জায়গায় দেখতে চাও?
পায়েল: আমি স্রেফ নিজের উন্নতি চাই। ঠিক কোন জায়গায় নিজেকে দেখতে পেলে খুশি হব জানি না। তবে চেষ্টা থাকবে৷ আমি অবশ্যই চাইব, আমার নামটা মানুষ চিনুক, শুনুক, জানুক।
প্রেরণা: এটা বেশ ভাল প্রশ্ন। আমার ইচ্ছেগুলো বড্ড সহজ সরল। আমি বেশ কিছু নামী ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করতে চাই৷
প্রশ্ন: অভিনয় তথা মডেলিংয়ের জগতে অভিজ্ঞতা কেমন? শুরু থেকে যদি বলো…
পায়েল : শুরুটা একেবারেই ভাল ছিল না, অত্যন্ত ভয়ে ভয়ে গুটিগুটি পায়ে এই কাজ শুরু করেছিলাম আমি। আমি জানতাম না, কে কাজ দেবে আমাকে, তবে যেহেতু ক্যামেরার সামনে ভালই দেখাত আমাকে, কাজ পেয়েছি। রাস্তায় চলার পথে ভাল প্রস্তাবের পাশাপাশি কু-প্রস্তাবও পেয়েছি৷ সেগুলো এড়িয়ে গেছি সন্তর্পণে, সে আলাদা বিষয়। আসলে আমার দ্বারা অসৎ উপায় অবলম্বন করে কোনও রকমের কাজ হাসিল সম্ভব না, তাই হয়ত বহু কাজ করার সুযোগ পাইনি। তবে, এ নিয়ে বিশেষ আফসোস নেই আমার। সত্যি বলছি।
প্রেরণা: আমি শুরু থেকে কিছুই জানতাম না। আমি এখনও শিক্ষানবিশ৷ ইন্ডাস্ট্রির মধ্যেও যে বিষয়ভেদ, বিভাগভেদ রয়েছে, জানতাম না। এখন একটু একটু বুঝছি। তবে হ্যাঁ, শুরু থেকেই সমস্ত অসৎ পন্থা দূরে সরিয়ে রেখেছি আমি। যখনই ফোনে কথা বলে বুঝতাম, অপরপক্ষ আমাকে শুধুমাত্র পণ্যের বিজ্ঞাপনের জন্য নয়, আমাকেই পণ্য হিসেবে পেতে চাইছে, সেখানে যেতাম না। কাজেই অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে পড়িনি।

২৪X৭ নিউজ বেঙ্গল এ সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা এবং ইংলিশ খবর পড়ুন ২৪X৭ নিউজ বেঙ্গল এর ওয়েবসাইটে। নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে।
‘রঙ’ ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা ‘খাচ্ছে’? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম ‘সংবাদ’! ‘ব্রেকিং’ আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের। কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে ‘রঙ’ লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে ‘ফেক’ তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই ‘ফ্রি’ নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।
Discussion about this post