দেবশ্রী মুখার্জী : নদিয়ায় কিশোরীর ধর্ষণ মামলার তদন্তে উঠে আসছে নতুন নতুন তথ্য যা নিয়ে বাড়ছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। গত মঙ্গলবার এই মামলার তদন্তভার সিবিআইকে হাতে দিয়েছিল হাইকোর্ট । জেলা পুলিশ তদন্ত থেকে সরে দাঁড়ানোয় নতুন করে আর কেউ গ্রেপ্তার হয়নি তবে কিশোরীর পরিবারের পক্ষ থেকে নতুন কিছু তথ্য সামনে আনা হয়েছে। মৃতার বাবা অভিযোগ করেন, তার বুকে বন্দুক ঠেকিয়ে মেয়ের মৃতদেহ তুলে নিয়ে গিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। মৃতার জেঠতুতো দাদা (যিনি এলাকায় বিজেপি কর্মী বলে পরিচিত) জানান, হুমকি চলতে থাকায় ভয়ে দেহটি মাদুরে জড়িয়ে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
আরো পড়ুন তারাপীঠের পুণ্যভূমি থেকেই রাজ্যের স্বৈরতান্ত্রিক শক্তিকে উৎখাতের ডাক দিলেন শুভেন্দু অধিকারী
তিনি এও বলেন, ‘এতদিন খুব ভয়ে ছিলাম এখন সিবিআই তদন্ত করবে জেনে সাহস পাচ্ছি অভিযোগ করার’। ইতিমধ্যেই গ্রামে গিয়ে পরিবারটির সঙ্গে দেখা করেন শান্তনু ঠাকুর সহ বিজেপির একাধিক নেতা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী দাবি করেন,”বাংলা যেন ক্রমশ ধর্ষকদের মৃগয়াক্ষেত্র হয়ে উঠেছে! মুখ্যমন্ত্রীর কথা শুনে ধর্ষকেরা আরো উৎসাহিত বোধ করছে।”সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য ,”গনধর্ষণ, খুন ,প্রমাণ লোপাটের জন্য মৃতদেহ পুড়িয়ে দেওয়া, এই যা চলছে মুখ্যমন্ত্রী তার পাশে দাঁড়াচ্ছেন! নির্যাতিতাদের পাশে তিনি নেই।মেয়েদের নিরাপত্তা দুর্ভাগ্যজনক ভয়ঙ্কর অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছে।” কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য এর জন্য মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়ার দাবি তোলা হয়েছে । এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, ঘটনা সামনে আসার পর পুলিশ পদক্ষেপ করেছে। তারপর সিবিআই তদন্তে রাজ্য সরকার সহযোগিতা করছে। তবে এই ঘটনা যেমন নিন্দনীয়, এই নিয়ে রাজনীতি করাও নিন্দনীয়।
আরো পড়ুন বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে প্রান্তিক শিশুদের নতুনবস্ত্র উপহার শ্যামনগরের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার
গত ৫ ই এপ্রিল ভরে মেয়েটির মৃত্যু হয়েছিল। এরপরে দিন চারেক কেটে গেলেও তার পরিবারের তরফে কোনো অভিযোগ করা হয়নি ।শেষে গত ৯ই এপ্রিল শনিবার রাতে চাইল্ড লাইনের সদস্যদের সঙ্গে থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন মৃতার বাবা। ওই রাতেই মূল অভিযুক্ত সোহেল ওরফে ব্রজ গয়ালি কে আটক করে পুলিশ। মৃতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে আসেন বিজেপির মতুয়া নেতা তথা সাংসদ শান্তনু ঠাকুর ও বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর। এরপর বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী দেখা করে যাওয়ার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন মৃতার মা। মৃত বাবা -মা কে বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসার পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। তারপরেই বিজেপির যুব মোর্চা রাজ্য সভাপতি ইন্দ্রনীল খাঁ তাদের বাড়ি গিয়ে দেখা করেন। এবিভিপি কিছু লোকজন শ্মশানে গিয়েও বিক্ষোভ প্রকাশ করেন।
Discussion about this post