আমজাদ আলী, মালদা : কাজ করতে গিয়ে ইলেকট্রিক শকে মর্মান্তিক মৃত্যু বিদ্যুৎ দপ্তরের এক অস্থায়ী কর্মীর।মৃত ওই বিদ্যুৎ কর্মী ঠিকাদারি সংস্থার অধীনে কাজ করতেন। গাফিলতি এবং মৃত্যুর প্রকৃত কারণ ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ বিদ্যুৎ দপ্তরের বিরুদ্ধে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে সবটা স্পষ্ট হবে দাবি বিদ্যুৎ দপ্তরের আধিকারিকের। মৃত কর্মীর পরিবারের লোক এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি মৃত্যুর প্রকৃত কারণ ধামাচাপা দিতে চাইছে বিদ্যুৎ দপ্তর।পরিবারকে সঠিক ভাবে জানানো হয়নি বলেও অভিযোগ। বিদ্যুৎ দপ্তর এবং ঠিকাদারি সংস্থার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখালো পরিবারের লোক এবং এলাকাবাসী।ক্ষতি-পূরণের দাবি জানাচ্ছে পরিবার। প্রশ্নের মুখে বিদ্যুৎ দপ্তরের ভূমিকা।মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত সুলতাননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের সাইরা কবরস্থান গ্রামের ঘটনা।রতুয়া ১ নম্বর ব্লকের ভাদো এলাকার ঘুরঘুরামনি গ্রামের বাসিন্দা আনিরুল(৪১)। হরিশ্চন্দ্রপুরে বিদ্যুৎ দপ্তরে একটি ঠিকাদারি সংস্থার অধীনে কাজ করতেন।মার্চ মাসের ৮ তারিখ সন্ধ্যা নাগাদ সুলতাননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের সাইরা গ্রামে বিদ্যুৎ দপ্তরের গাড়িতে অন্যান্য কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে যান তিনি।ওই গ্রামে কবরস্থানের কাছে একটি বিদ্যুতের পোলে ওঠেন তারের কাজ করার জন্য। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি তিনি উঠতে চাইছিলেন না। কিন্তু উপস্থিত অন্যান্য কর্মীরা বলে বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তারপরে তারের কাজ করার জন্য পোলে ওঠেন তিনি।অথচ বন্ধ করা হয় নি বিদ্যুৎ পরিষেবা।
ফলে ১১০০০ ভোল্টের তারে হাত দিতেই শক খেয়ে সাথে সাথে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এমনটাই দাবি করেছেন প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দারা। এমনকি তাদের অভিযোগ সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ার পর স্থানীয়রা চিৎকার করে ছুটে গেলে বিদ্যুৎ দপ্তরের অন্যান্য কর্মীরা স্থানীয়দের থামিয়ে দেন।ওই অবস্থাতেই তাকে বিদ্যুৎ দপ্তরের গাড়িতে তুলে নিয়ে চলে যাওয়া হয়।প্রথমে ভর্তি করা হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। পরবর্তীতে সেখান থেকে স্থানান্তরিত করা হয় চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে।সেখানে মৃত্যু হয়় আনিরুলের।আনিরুলের পরিবারের অভিযোগ বিদ্যুৎ দপ্তরের লোকেরা তাকে হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতালে ছেড়ে দিয়ে চলে গেছিল।আর চিকিৎসককে বলেছিল মাথা ঘুরে পড়ে গিয়ে অসুস্থ হয়েছে। সোমবার দুপুরে আনিরুলের পরিবারের লোক সাইরা গ্রামে আসে।পরিবারের লোকের সাথে ওই গ্রামের স্থানীয়রা বিদ্যুৎ দপ্তরের বিরুদ্ধে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়। প্রত্যেকে ক্ষতি-পূরণ এবং তদন্তের দাবি করে।আনিরুলের পরিবার রয়েছে তিন ছেলে এবং স্ত্রী। তার উপার্জনেই চলতো সংসার।এই ভাবে আকস্মিক মৃত্যুতে মাথায় হাত পড়েছে পরিবারের।পরবর্তীতে কি ভাবে সংসার চলবে ভেবে পাচ্ছে না কেউ।পরিবারের লোকের অভিযোগ শুধুমাত্র গাফিলতির জন্য এই ভাবে এক জনের প্রাণ চলে গেল। এর দায় কে নেবে? যদিও বিদ্যুৎ দপ্তরের দাবি ইলেকট্রিক শকে আনিরুলের মৃত্যু হয় নি।পোলে উঠতে গিয়ে মাথা ঘুরে সিড়ি থেকে পড়ে গেছিল। কিন্তু বিদ্যুৎ দপ্তরের এই যুক্তি মানতে নারাজ তার পরিবারের লোক।
নর্থ মালদা ডিভিশনাল বিদ্যুৎ দপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সমগ্র ঘটনার রিপোর্ট নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই সবটা পরিষ্কার হয়ে যাবে। পেটের টানে ঠিকাদারের অধীনে স্বল্প বেতনে কাজ করতেন আনিরুল। বিদ্যুৎ দপ্তরের ভুলের মাশুল দিতে হলো তাকে।প্রশ্ন উঠেছে কেও যখন ১১০০০ ভোল্টের তারে কাজ করতে উঠছে কেনো সেফটি বেল্ট ছিল না? যদি বিদ্যুৎ দপ্তরের দাবি অনুযায়ী সে মাথা ঘুরেও পড়ে যায় তাহলে সেফটি বেল্ট থাকলে বিপদ এড়ানো যেত।স্থানীয়দের দাবি এই ভাবেই অস্থায়ীদের কর্মীদের দাড়া কোনো নিরাপত্তা এবং নিয়ম ছাড়াই কাজ করায় বিদ্যুৎ দপ্তর।অনিরুলের মৃত্যু চোখে হাত দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে বিদ্যুৎ দপ্তরের ভুল।

২৪X৭ নিউজ বেঙ্গল এ সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা এবং ইংলিশ খবর পড়ুন ২৪X৭ নিউজ বেঙ্গল এর ওয়েবসাইটে। নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে।
‘রঙ’ ছাড়া সংবাদ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কোন খবরটা ‘খাচ্ছে’? সেটাই কি শেষ কথা? নাকি আসল সত্যিটার নাম ‘সংবাদ’! ‘ব্রেকিং’ আর প্রাইম টাইমের পিছনে দৌড়তে গিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সত্যিকারের সাংবাদিকতার। অর্থ আর চোখ রাঙানিতে হাত বাঁধা সাংবাদিকদের। কিন্তু, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভে ‘রঙ’ লাগানোয় বিশ্বাসী নই আমরা। আর মৃত্যুশয্যা থেকে ফিরিয়ে আনতে পারেন আপনারাই। সোশ্যালের ওয়াল জুড়ে বিনামূল্যে পাওয়া খবরে ‘ফেক’ তকমা জুড়ে যাচ্ছে না তো? আসলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই ‘ফ্রি’ নয়। তাই, আপনার দেওয়া একটি টাকাও অক্সিজেন জোগাতে পারে। স্বতন্ত্র সাংবাদিকতার স্বার্থে আপনার স্বল্প অনুদানও মূল্যবান। পাশে থাকুন।
Discussion about this post